ঢেউ খেলানো চা-বাগানের দেশ মৌলভীবাজার | Tea garden sylhet in bangladesh - moulvibazar
ঢেউ খেলানো চা-বাগানের দেশ
মৌলভীবাজার
দেশের উত্তর-পূর্বে অবস্থিত প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অপরূপ লীলা ভূমি মৌলভীবাজার। ১৬১২ সালে মৌলভীবাজারের ৩ মাইল পশ্চিমে খাজা ওসমান লোহানী ও মোঘল সেনাপতি ইসলাম খানের ঐতিহাসিক যুদ্ধ এবং ১৮৫৭ সালে সর্বভারতীয় সিপাহি বিপ্লবে মৌলভীবাজারের লাতুর যুদ্ধ ইতিহাসখ্যাত। এই জেলার ওপর দিয়ে বয়ে গেছে মনু, জুরী, ধলাই নদী। মৌলভীবাজার জেলার উত্তরে সিলেট জেলা, দক্ষিণে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্য, পূর্বে ভারতের আসাম রাজ্য এবং পশ্চিমে হাবিগঞ্জ জেলা অবস্থিত। জেলার আয়তন প্রায় ২,৭৯৯ বর্গকিলোমিটার।
মৌলভীবাজার জেলা মোট ৭টি উপজেলা নিয়ে গঠিত। উপজেলাগুলো হল - মোলভীবাজার সদর, শ্রীমঙ্গল, রাজনগর, জুড়ি, কুলাউড়া, বড়লেখা আর কমলগঞ্জ। এখানে উল্লেখযোগ্য দেখার জায়গা হল - দক্ষিণভাগ, শাহবাজপুর, ফুলতলা, সাতগাঁও, বরমচাল, শমসেরনগর, মোস্তফাপুর, পূর্ব জুরী, কামারচর, গিয়াসনগর, তালিমপুর, পূজানগর, নিজবাহাদুরপুর, বোরনী প্রভৃতি।
সমাজসংস্কারক মৌলভী কুদরউল্লাহর প্রতি সম্মান জানিয়ে এ জেলার নাম রাখা হয় মৌলভীবাজার। কৃতী সন্তান হলেন - মধ্যযুগের কবি শেখ চান্দ, খান বাহাদুর আবদুল মজিদ (রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব) ।
টিলায় টিলায় চা-বাগান, অরণ্য দেখতে চাইলে মৌলভীবাজার বেড়াতে যাবেন। মৌলভীবাজারে দেখবেন হযরত সৈয়দ শাহ মোস্তফা (রহ.) শের-এ ছওয়াব চাবুকের মাজার শরীফ। আরেক আকর্ষণ পৃথ্বিম পাশার নবাব বাড়ী।
মৌলভীবাজার শহরটি দেখার পর চা-বাগানে যাবেন। পাহাড় আর টিলার গায়ে চা-বাগান দেখে এতই ভালো লাগবে যে এখানে দাঁড়িয়ে অনেকগুলো ছবি তুলতে ইচ্ছে হবে।
বিরাহিমাবাদ গ্রামে গিয়ে অজ্ঞান ঠাকুরের মন্দিরটি দেখুন। মনু ব্যারেজ দেখে আরো বেশি আনন্দ পাবেন। এখানে বালুচরে অসংখ্য পাখির ঝাঁক প্রাকৃতিক সৌন্দর্য আরো নয়নাভিরাম করে তুলেছে। মনু ব্রিজটি দেখতে ভুলে যাবেন না কিন্তু। পড়ন্ত বিকালে মনু নদীতে নৌবিহার করতে পারেন। খোঁজার মসজিদটি দেখতে চাইলে গয়ঘর গ্রামে চলে যান।
একদা মৌলভীবাজার ইটা, ব্রহ্মাচল, ব্রহ্মপুত্র ও প্রতাপনগর ইত্যাদি খন্ড খন্ড সীমান্ত রাজ্যে বিভক্ত ছিল। ইটা রাজ্যের মনুকুল প্রদেশে একসময়ে বৌদ্ধবিহার তক্ষশীলার মতো একটি বিদ্যাপীঠ ছিল যা বর্তমানকালের বিশ্ববিদ্যালয়ের মর্যাদাসম্পন্ন।
মৌলভীবাজার থেকে ১৫ মিলোমিটার দূরে রাজনগর। এখানে দেখবেন কমলরানীর দীঘি। স্কুটার কিংবা রিকশায় এখানে যেতে পারবেন। কমলরানীর দীঘির আরেক নাম সাগর দীঘি। রাজনগরের যে দিকে যাবেন দেখবেন চা-বাগান, পাহাড়, অরণ্য, টিলা।
কমলগঞ্জ বেশিদূরে নয়। এখানে গিয়ে দেখুন মণিপুরী উপজাতিদের বাড়িঘর। এখানকার জনজীবনকে এরা বৈচিত্রময় করে তুলেছে। মনিপুরী ললিতকলা একাডেমীটি ঘুরে দেখুন। এটি ১৯৭৭ সালে প্রতিষ্ঠিত।
Post a Comment